রুশ বাহিনীর হামলায় রাস্তায়-মাঠে পোড়া লাশের স্তূপ, বুচা শহর যেন এক মৃত্যুপুরী

রুশ বাহিনীর হামলায় রাস্তায়-মাঠে পোড়া লাশের স্তূপ, বুচা শহর যেন এক মৃত্যুপুরী

রুশ বাহিনীর হামলায় রাস্তায়-মাঠে পোড়া লাশের স্তূপ, বুচা শহর যেন এক মৃত্যুপুরী
রুশ বাহিনীর হামলায় রাস্তায়-মাঠে পোড়া লাশের স্তূপ, বুচা শহর যেন এক মৃত্যুপুরী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের বাইরে বুচা শহরে রুশ বাহিনীর হামলায় মৃত্যু মিছিল। বুচা ঘুরলেই রাশিয়ান সেনার ভয়ঙ্কর অত্যাচারের ছবিটা স্পষ্ট হবে। বুচা শহরের এক জায়গায় পুড়ে যাওয়া একটি কালো শরীর চোখে পড়ে অ্যাসোসিয়েট প্রেসের সাংবাদিকদের, মুখটিও ভয়ঙ্করভাবে বিকৃত হয়েছিল। পাশেই পড়েছিল অন্য আরও একজনের নিথর শরীর। তাঁরও মাথার খুলিতে বুলেটের ক্ষতচিহ্ন স্পষ্ট। কিয়েভের বাইরে এই শহরে পুড়ে যাওয়া সারি-সারি মৃতদেহের ভিড়ে একটি শিশুরও খোঁজ মিলেছে। মৃতদেহের স্তূপ থেকে তাঁর ছোট্ট পা দেখা গেছে। শিশুটির সারা শরীর জুড়ে রুশ সেনার ভয়ঙ্কর অত্যাচারের প্রমাণ স্পষ্ট।

বুচা শহর যেন এক মৃত্যুপুরী। শহরে কাতারে-কাতারে মৃত মানুষ। ঠিক কীভাবে তাঁদের মৃত্যু হল, স্পষ্ট নয়। ভয়হ্কর এই দৃশ্য দেখে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা বিশ্ব। পাঁচ সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চালিয়ে যাওয়া আগ্রাসনের শেষ কোথায়? পুতিনকে এই প্রশ্নই করছেন রাষ্ট্রনেতারা। মঙ্গলবার অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের সাংবাদিকরা দেখেছেন বুচায় মৃতদেহের স্তূপ।

একটি রাস্তার পাশেই খেলার মাঠের কাছে ছিলেন বেশ কিছু মানুষ। আগ্রাসনের হাত থেকে বাঁচতে সাহায্য চাইছিলেন তাঁরা। ওই এলাকার কাছে একটি বাড়ির ঠিক বেসমেন্টের মুখে গুলিবিদ্ধ এক যুবকের রক্তাক্ত দেহ পড়েছিল। অন্তত আরও চারটি মৃতদেহ রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছিল। কারও চোখে গুলি লেগেছিল, কারও সারা শরীরে ছিল গুলির দাগ।

সাংবাদিকদের পাশাপাশি ঘটনাস্থল ঘুরে দেখে শিউরে ওঠেন ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ডেনিস মোনাস্টিরস্কি। তাঁর কথায়,”এটা ভয়ঙ্কর। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উচিত জাহান্নামে যাওয়া।” কিয়েভের পুলিশ প্রধান আন্দ্রি নেবিতোভ জানান, বুচায় পোড়া মৃতদেহগুলির মধ্যে একটি শিশুও ছিল। সংবাদসংস্থা এপি বুচার আশেপাশে কয়েক ডজন মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেছে।

গত সপ্তাহে এই এলাকা থেকেই রাশিয়ান বাহিনী সরেছে। কয়েকটি মৃতদেহ এখনও অস্ত্র গাঁথা অবস্থায় দেখা গিয়েছে। সেই ছবি দেখে আতঙ্কে কাঁপছে বিশ্ব। সারি-সারি ওই মৃতদেহের মধ্যে কারও হাত ছিল বাঁধা, কারও মাথায় গুলি করা হয়েছিল কারও আবার চোখে। এক কথায় এপি-র সাংবাদিকরা যা দেখছেন তা গোটা বিশ্বের কাছেই অত্যন্ত কষ্টের ও অত্যন্ত উদ্বেগের।

ম্যাক্সার টেকনোলজিসের হাই রেজোলিউশন স্যাটেলাইট থেকে মেলা ছবিতে এটা স্পষ্ট হয়েছে, যে অনেক মৃতদেহই কয়েক সপ্তাহ ধরে খোলা জায়গায় পড়েছিল। সেই সময়ে রাশিয়ান বাহিনী বুচা শহরেই ছিল। ইউক্রেনের প্রশাসনিক কর্তারা জানিয়েছেন, কিয়েভের আশেপাশের শহরগুলিতে কমপক্ষে ৪১০ জন সাধারণ নাগরিকের মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে। বুচার একটি এলাকার একটি ঘরকে কার্যত ‘টর্চার চেম্বার’ বানিয়েছিল রুশ সেনা। সেই ঘরটিরও খোঁজ মিলেছে।

বুচায় রাশিয়ান সেনাবাহিনীর ভয়াবহ অত্যাচারের ছবি দেখে শিউরে উঠছে বহির্বিশ্ব। বাড়িতে, রাস্তায়, মাঠে সারি সারি মৃতদেহ। খোলা জায়গায় ফেলে রাখা হয়েছে একের পর এক দেহ। পোড়া মৃতদেহের ভয়াবহ ছবি ক্রেমলিনের বিরুদ্ধে জনমত আরও চড়া করছে। বিশেষ করে রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেলের আমদানি অবিলম্বে বন্ধের সওয়াল উঠেছে বিশ্বজুড়ে।

 

মতিহার বার্তা / এম আর টি

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply